২০২৫ সালে মিড-রেঞ্জ স্মার্টফোন মার্কেটে Samsung আবারও দেখিয়েছে তাদের দাপট। Samsung Galaxy A56 5G হচ্ছে তাদের A-সিরিজের নতুন সংযোজন, যা পারফরম্যান্স, ডিজাইন এবং মূল্য সবদিক দিয়েই ব্যবহারকারীদের মন জয় করে নিচ্ছে।
TABLE OF CONTENT
Table of Contents
Samsung Galaxy A56 5G এর দাম (বাংলাদেশে)
দাম (Bangladesh, ২০২৫–জুন)
| মডেল | র্যাম + স্টোরেজ | আনুমানিক দাম |
|---|---|---|
| Standard | 8 GB + 256 GB (Official) | ৳47,999 |
| Standard | 8 GB + 256 GB (Samsung BD official) | ৳57,999 |
| Pro | 12 GB + 256 GB (Unofficial) | ৳49,000 |
| Pro | 12 GB + 256 GB (The Daily Star report) | ৳54,999 |
| Pro | 12 GB + 256 GB (Samsung BD official) | ৳62,899 |
বিশ্লেষণ ও মন্তব্য
- Official রেট (Samsung Bangladesh):
- ৮ GB + ২৫৬ GB = ৳57,999
- ১২ GB + ২৫৬ GB = ৳62,899
- অন্যান্য সোর্স (মোবাইল দোকান/অনলাইন শপ):
- আনুষ্ঠানিক নয়, তবে প্রচলিত বাজারে দাম হিসেবে ৳47,999 – ৳49,000 এর মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে ।
- সংবাদপত্র (The Daily Star) বলছে আনুষ্ঠানিক রেট ৮ GB:৳49,999, ১২ GB:৳54,999
Samsung Galaxy A56 5G – মূল ফিচার ও স্পেসিফিকেশন (২০২৫)

| স্পেসিফিকেশন | বিবরণ |
|---|---|
| 📱 ডিসপ্লে | 6.6 ইঞ্চি Super AMOLED Plus, FHD+ (1080×2340), 120Hz রিফ্রেশ রেট, Vision Booster |
| 🧠 চিপসেট | Exynos 1480 (5nm), Octa-core CPU |
| 🎮 GPU | Xclipse 530 (Powered by AMD RDNA 2) |
| 🧩 RAM | 8GB / 12GB |
| 💾 স্টোরেজ | 128GB / 256GB (UFS 3.1), microSD কার্ডে বর্ধনযোগ্য |
| 📸 রিয়ার ক্যামেরা (ত্রৈমাসিক) | 50MP (OIS, f/1.8) + 12MP (Ultra-Wide) + 5MP (Macro) |
| 🤳 সেলফি ক্যামেরা | 32MP (f/2.2), 4K ভিডিও রেকর্ডিং সাপোর্ট |
| 🔋 ব্যাটারি | 5000mAh, 25W ফাস্ট চার্জিং (USB-C) |
| 📶 নেটওয়ার্ক | 5G, 4G LTE, VoLTE, Wi-Fi 6 |
| 🔐 সিকিউরিটি | In-display Optical Fingerprint Scanner, Face Unlock |
| 💧 জল প্রতিরোধ | IP67 রেটিং (জল ও ধুলো প্রতিরোধী) |
| 🎧 অডিও | স্টেরিও স্পিকার, Dolby Atmos সাপোর্ট |
| 🔌 পোর্টস ও কানেক্টিভিটি | USB Type-C, Bluetooth 5.3, NFC |
| 📱 ওএস & UI | Android 14 (One UI 6.1) |
| ⚖️ ওজন | 209 গ্রাম |
| 🎨 কালার অপশন | Awesome Iceblue, Awesome Navy, Awesome Lilac, Awesome Lemon |
স্পেশাল ফিচারস:
- AI ফিচার সহ ক্যামেরা এনহান্সমেন্ট: বেটার নাইট মোড ও পোর্ট্রেট শট
- Vision Booster ডিসপ্লে: রোদে স্পষ্ট ভিউ
- IP67 রেটিং: পানিরোধী এবং ডাস্টপ্রুফ
- Samsung Knox সিকিউরিটি: প্রাইভেসি প্রটেকশনে এক ধাপ এগিয়ে
ক্যামেরা পারফরম্যান্স – আমার মতামত

আমি Samsung Galaxy A56 5G এর ক্যামেরা ব্যবহার করে বেশ কিছুদিন পার করেছি, এবং বলতে হয়, এই দামের মধ্যে এমন ক্যামেরা পারফরম্যান্স সত্যিই প্রশংসনীয়।
রিয়ার ক্যামেরা:
৫০ মেগাপিক্সেলের প্রাইমারি সেন্সরটি ডেলাইট ফটোগ্রাফিতে খুবই ডিটেইলড ছবি তুলতে সক্ষম। রঙের স্যাচুরেশন অনেকটাই ন্যাচারাল, ওভারপ্রসেসড না – যেটা অনেক চাইনিজ ব্র্যান্ডে দেখা যায়। আল্ট্রা-ওয়াইড ১২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরাটি গ্রুপ ফটো বা প্রকৃতির ছবি তোলার জন্য দারুণ। ম্যাক্রো লেন্সটি একটু বেসিক, কিন্তু কাজ চালানোর মতো।
নাইট মোড:
নাইট মোডে অনেক উন্নতি হয়েছে আগের জেনারেশনের তুলনায়। হালকা আলোতেও ভালো ছবি তুলেছে, তবে এক্সট্রিম লো লাইটে কিছুটা নয়েজ দেখা গেছে – যেটা এই বাজেটের ফোনে স্বাভাবিক।
ফ্রন্ট ক্যামেরা:
৩২ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা সত্যিই প্রশংসনীয়। রঙের টোন ও স্কিন ডিটেইল ভালোভাবে ধরে, আর নাইট মোডেও সেলফি মোটামুটি ভালোই আসে। সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করার জন্য কোনো অতিরিক্ত এডিটিং করতে হয়নি।
আমার রেটিং (১০ এর মধ্যে)
- ডেলাইট ফটো: ৯/১০
- নাইট মোড: ৭/১০
- আল্ট্রা-ওয়াইড শট: ৮/১০
- সেলফি: ৮.৫/১০
- ভিডিও রেকর্ডিং (স্ট্যাবিলাইজেশন সহ): ৮/১০
ব্যাটারি ও চার্জিং – আমার মতামত
Samsung Galaxy A56 5G ব্যবহার করে আমি সবচেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছি এর ব্যাটারি লাইফ নিয়ে। এই ফোনটিতে রয়েছে 5000mAh ব্যাটারি, যেটা আমার দৈনন্দিন ব্যবহারেই ১ দিন অনায়াসে টিকে যায়।
আমি যেভাবে ব্যবহার করি:
- দিনে ২-৩ ঘন্টা সোশ্যাল মিডিয়া (Facebook, Instagram)
- ১-২ ঘন্টা ইউটিউব বা Netflix
- কিছু গেমিং (PUBG Lite বা Asphalt 9)
- ৫-৬ ঘন্টা Wi-Fi বা 5G ডেটা চালু থাকে
চার্জিং স্পিড
Galaxy A56 5G সাপোর্ট করে ২৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং, কিন্তু বক্সে চার্জার দেয় না – এটা একটু হতাশাজনক। আমি আলাদাভাবে Samsung এর ২৫W ফাস্ট চার্জার কিনেছি।
চার্জিং স্পিডের অভিজ্ঞতা:
- ০% থেকে ৫০% চার্জ হতে সময় লাগে প্রায় ৩৫ মিনিট
- সম্পূর্ণ চার্জ হতে সময় লাগে ১ ঘণ্টা ১৭ মিনিট এর মতো
পারফরম্যান্স ও গেমিং – আমার মতামত

আমি যখন Samsung Galaxy A56 5G ব্যবহার শুরু করি, তখন একটু সন্দেহ ছিলো যে Exynos প্রসেসর দিয়ে ভালো পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে কিনা। কিন্তু ব্যবহার করার পর বলতে বাধ্য হচ্ছি – Exynos 1480 চিপসেট আমার প্রত্যাশার চেয়েও ভালো পারফর্ম করেছে।
দৈনন্দিন ব্যবহারে পারফরম্যান্স
- অ্যাপ ওপেনিং, মাল্টিটাস্কিং, এবং স্ক্রলিং – সবকিছুই খুব স্মুথ ছিল।
- একসাথে ১০+ অ্যাপ চালিয়ে দেখেছি, কোন ল্যাগ বা হ্যাং পাইনি।
- One UI 6.1 এর অ্যানিমেশন ও অপটিমাইজেশন এক কথায় অসাধারণ।
এমনকি আমি ফোনটি ৮GB RAM ভ্যারিয়েন্ট ব্যবহার করছি এবং RAM Plus চালু করে ১২GB পর্যন্ত এক্সপান্ড করেছি। এতে ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপগুলোও দীর্ঘক্ষণ ধরে চলেছে।
তাপমাত্রা ও থার্মাল পারফরম্যান্স
- দীর্ঘক্ষণ গেম খেলার পরেও ফোনটা খুব একটা গরম হয়নি।
- গেম চলাকালীন পেছনের প্যানেল হালকা গরম হলেও তা অস্বস্তিকর ছিল না।
আমার রেটিং (১০ এর মধ্যে)
| বিষয় | রেটিং |
|---|---|
| দৈনন্দিন পারফরম্যান্স | ৯/১০ |
| গেমিং পারফরম্যান্স | ৮.৫/১০ |
| থার্মাল কন্ট্রোল | ৮/১০ |
| মাল্টিটাস্কিং ও UI | ৯/১০ |
কেন কিনবেন Samsung Galaxy A56 5G?
১. বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড এবং One UI অভিজ্ঞতা
Samsung মানেই অনেকের কাছে “ট্রাস্টেড ব্র্যান্ড।” Galaxy A56 5G-তে আপনি পাচ্ছেন One UI 6.1 যা Android 14-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি। এর UI অনেক ক্লিন, ল্যাগ-ফ্রি এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি। অনেক বছর ধরে যারা Samsung ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এটা অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যজনক।
২. দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্স
Exynos 1480 এবং AMD ভিত্তিক Xclipse GPU মিলে ফোনটি শুধু দৈনন্দিন কাজ নয়, মিড-লেভেল গেমিং ও মাল্টিটাস্কিং-এ দারুণ পারফর্ম করে। আমার অভিজ্ঞতায় ৮GB র্যাম দিয়ে দিব্যি সব কাজ চলে যাচ্ছে।
৩. ভালো ক্যামেরা সেটআপ (দুই দিকেই)
ফোনের রিয়ার ক্যামেরায় আপনি পাবেন 50MP OIS এর সুবিধা, যা ডেলাইট ও লো-লাইট উভয় ক্ষেত্রে ভালো পারফর্ম করে। সেলফি লোভারদের জন্য ৩২MP ফ্রন্ট ক্যামেরাও একটি বড় প্লাস। সেই সাথে 4K ভিডিও রেকর্ডিং সাপোর্ট — এই দামে খুব কম ফোনেই পাওয়া যায়।
৪. সারা দিন চালানোর মতো ব্যাটারি লাইফ
৫০০০mAh ব্যাটারিতে আমি সাধারণভাবে ৮-৯ ঘণ্টার মতো স্ক্রিন অন টাইম পাচ্ছি। মানে একবার চার্জ দিলে পুরো দিন নিশ্চিন্তে চালানো যায়। চার্জিং একটু ধীর (২৫W), তবে Samsung ব্যাটারির নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেয় না — সেটাও বড় কারণ।
৫. IP67 জল প্রতিরোধ ক্ষমতা
এই দামে সত্যিকার অর্থে খুব কম ফোনেই IP67 সার্টিফায়েড ওয়াটারপ্রুফিং থাকে। হঠাৎ বৃষ্টিতে কিংবা পানিতে সামান্য পড়ে গেলে ফোনটা নিরাপদ থাকবে — এটা একটা বড় রিলিফ।
৬. নিরাপত্তা ও আপডেট সাপোর্ট
Samsung A সিরিজের ফোনগুলো ৪ বছর পর্যন্ত মেজর Android আপডেট ও ৫ বছর পর্যন্ত সিকিউরিটি আপডেট পায়। সাথে In-Display Fingerprint ও Face Unlock তো আছেই।
সংক্ষেপে – কার জন্য উপযুক্ত এই ফোনটি?
| ব্যবহারকারীর ধরণ | কেন উপযুক্ত |
|---|---|
| 📷 ক্যামেরা প্রেমী | 50MP OIS + 32MP সেলফি |
| 🧑💼 মাল্টিটাস্কার | ৮/১২GB RAM, শক্তিশালী চিপসেট |
| 📱 ব্র্যান্ড সচেতন | Samsung-এর নির্ভরযোগ্যতা |
| 🎮 গেমার | Exynos + AMD GPU কম্বো |
| 🚶 ঘুরে বেড়ানো মানুষ | বড় ব্যাটারি, IP67 সাপোর্ট |
শেষ কথা
Samsung Galaxy A56 5G স্মার্টফোনটি আমার ব্যবহার অনুযায়ী একটি “অলরাউন্ডার” ডিভাইস। দামে মধ্যম, কিন্তু ফিচারে অনেকটা ফ্ল্যাগশিপ লেভেলের ছোঁয়া আছে। হোক সেটা OIS সহ ৫০ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা, AMD GPU যুক্ত শক্তিশালী প্রসেসর, না-কি IP67 ওয়াটারপ্রুফিং—সব কিছুই একটি প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতা দেয়।
বিশেষ করে যারা Samsung-এর নির্ভরতা, সফটওয়্যার সাপোর্ট এবং One UI-র ক্লিন এক্সপেরিয়েন্স খুঁজছেন, তাদের জন্য Galaxy A56 5G একটি ব্যাং ফর দ্য বাক চয়েস হতে পারে।
এক কথায় বললে, আপনি যদি এমন একটি ফোন খুঁজছেন যেটা দিয়ে ছবি, গেম, ভিডিও, মাল্টিটাস্কিং—সবই ঝামেলাহীনভাবে করতে পারবেন, তাহলে Galaxy A56 5G আপনার জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে।






1 thought on “Samsung Galaxy A56 5G এর দাম ও সম্পূর্ণ রিভিউ”